ভুট্টা (Maize):
ভুট্টা Cyperales বর্গের Graminae গোত্রের একদানা খাদ্যশস্য, Zea mays। যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায় ভুট্টা ‘কর্ন’ নামে সুপরিচিত এবং এটি সেখানকার অন্যতম প্রধান দানা ফসল। ‘মেইজ’ (maize) শব্দের উৎপত্তি ভারতীয় আরাওয়াক (Arawak) শব্দ ma-hiz থেকে। স্প্যানিশ ভাষায় একে maiz বলা হয় এবং এ শব্দ আমেরিকার স্প্যানিশ ভাষা-ভাষীদের মধ্যে এখনো চালু আছে। পশ্চিম গোলার্ধে ইউরোপিয়ানদের পৌঁছাবার পূর্বেই আমেরিকায় ভুট্টার চাষাবাদ শুরু হয় বলে জানা যায়।
ভুট্টা একবীজপত্রী, শক্ত এক কান্ডবিশিষ্ট বীরুৎ। গাছ সোজা বা খাড়া হয়ে জন্মায় এবং ঠেসমূল মাটির সাথে একে আটকে রাখে। ঠেসমূল বেশ মোটা, পরবর্তীতে মাটিতে প্রবেশ করে এগুলো স্বাভাবিক মূলের ন্যায় কাজ করে। ভুট্টা গাছের উচ্চতা হয় অনেকটা আখ গাছের মতোই। জাত অথবা প্রজাতি ভেদে ১ থেকে ৩ মি পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। কদাচিৎ কুশি হয়। কান্ড নিরেট, ৩-৪ সেমি ব্যাসযুক্ত। পর্বের সংখ্যা সাধারণত ১১-১৫টি। মাঝের বা উপরের দিকের পর্বের কুঁড়ির মধ্যে মোচা জন্মে। মোচার সংখ্যা জাত ভেদে কমবেশি হয়। ভুট্টার পাতা গাছের দুপাশে দুসারিতে সাজানো, সাধারণত সংখ্যায় হয় ১৬ থেকে ২৩। পাতা লম্বা ও চওড়া, ধার কিছুটা ঢেউ খেলানো। পাতার উপরিভাগে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কাঁটার মতো রোম থাকায় অমসৃণ দেখায়; অঙ্কীয়ভাগ মসৃণ।
ভুট্টা থেকে নানা ধরনের খাদ্য সামগ্রী তৈরি করা যায়। চাল এবং গমের মতোই খাদ্য হিসেবে এ ফসল ব্যবহারের উপযোগী। ভুট্টা এবং ভুট্টার ময়দা থেকে অথবা গম বা অন্য কোনো শস্যের ময়দার সঙ্গে মিশিয়ে তা দিয়ে পরোটা, পুরি, সুপ, মিশ্রিত খাদ্য, খিচুরি, ভুট্টা পোলাও ইত্যাদি উপাদেয় খাদ্য তৈরি করা সম্ভব।
মটর (Pea):
মটর দ্বিবীজপত্রী বীজ। যেসব বীজে সস্য থাকে না তাদেরকে অসস্যল বীজ বলে। প্রচুর খাদ্য সঞ্চয় করে বলে এ সকল বীজের বীজপত্র বেশ পুরু হয়। মটরকে আবার অসস্যল বীজ বলা হয়। এই বীজ স্থুল এবং বীজত্বক ও ফলত্বক পরস্পর পৃথক। মটরবীজে ভ্রূণমুল ও ঘৃণমুকুল আবরণবিহীন। এই বীজ দেখতে বা আকারে গোলাকার।
ভুট্রা ও মটর বীজের মধ্যে পার্থক্যঃ
ভুট্টা একবীজপত্রী, শক্ত এক কান্ডবিশিষ্ট বীরুৎ। গাছ সোজা বা খাড়া হয়ে জন্মায় এবং ঠেসমূল মাটির সাথে একে আটকে রাখে। ভুট্রা ও মটর বীজের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-
১. ভুট্রা একবীজপত্রী বীজ। অন্যদিকে, মটর দ্বিবীজপত্রী বীজ।
২. ভুট্রা সস্যল বীজ। অন্যদিকে, মটর অসস্যল বীজ।
৩. ভুট্রা বীজপত্র পাতলা। অন্যদিকে, মটর বীজপত্র স্থুল।
৪. ভুট্রাবীজে বীজত্বক ও ফলত্বক পরস্পর যুক্ত। অন্যদিকে, মটরবীজে বীজত্বক ও ফলত্বক পরস্পর পৃথক।
৫. ভুট্রাবীজে ভ্রূণমুল ও ঘৃণমুকুল আবরণী যুক্ত। অন্যদিকে, মটরবীজে ভ্রূণমুল ও ঘৃণমুকুল আবরণবিহীন।
৬. ভুট্রাবীজ চ্যাপ্টা ও আয়তাকার। অন্যদিকে, মটরবীজ আকারে গোলাকার।