পদার্থ ও শক্তির মধ্যে পার্থক্য

পদার্থ (matter):

আমাদের চারপাশে নানারকম জিনিস রয়েছে। যেমন- চেয়ার, টেবিল, মাটি, পানি, বায়ু, লোহা ইত্যাদি। এ সবকিছুই পদার্থের তৈরি। যা জায়গা দখল করে, যার ওজন আছে, আকার ও আকৃতি আছে এবং বলপ্রয়োগে বাধার সৃষ্টি করে তাকে পদার্থ বলে। পদার্থের প্রকারভেদ: পদার্থ দুই প্রকার। যথা:

১.মৌলিক পদার্থ । যেমন- hydrogen

২.যৌগিক পদার্থ । যেমন- H20 (পানি)

শক্তি (Energy):

পদার্থবিজ্ঞানে কাজ করার সামর্থ্যই হলো শক্তি। পদার্থবিজ্ঞানে কাজ ও শক্তির সুনির্দিষ্ট এবং সুস্পষ্ট অর্থ আছে। কাজ ও শক্তি পরস্পর পরিপূরক। কাজের পরিমাণ করে শক্তি নির্ণয় করা যায়। কোনো ব্যবস্থা দ্বারা সম্পন্ন কাজ পরিমাপ করে ঐ ব্যবস্থার শক্তি পরিমাপ করা যায়। পদার্থবিজ্ঞানে কাজ সম্পন্ন করতে হলে বলের প্রয়োজন হয়। আবার বল প্রয়োগে বস্তু গতি প্রাপ্ত হয়। গতির কারণে বস্তু গতিশক্তি লাভ করে। বস্তুর এই গতিশক্তিই বস্তু কর্তৃক সম্পন্ন কাজের পরিমাপক। বস্তুকে অভিকর্ষের বিরুদ্ধে উপরে উঠালে যে কাজ সম্পন্ন হয় তা বস্তুতে বিভবশক্তি হিসাবে সঞ্চিত থাকে। কাজ পরিমাপের সাহায্যে স্থিতিশক্তির পরিমাপ করা যায়। সুতরাং দেখা যাচ্ছে, কাজ ও শক্তি পরস্পরের পরিপূরক মাত্র। কাজ ও শক্তির একক অভিন্ন। কোন ব্যবস্থার (system) শক্তি পরিমাপের মধ্যে দিয়ে ব্যবস্থাটি কি পরিমাণ কাজ করতে সমর্থ হবে তা নির্ণয় করা যায়। একই ভাবে একটি ব্যবস্থা কর্তৃক সম্পন্ন কাজ পরিমাপ করে ব্যবস্থাটির শক্তির পরিমাণ নির্ধারণ করা যায়। কাজ হচ্ছে শক্তির যান্ত্রিক স্থানান্তর। বস্তুর উপর বল প্রয়োগের ফলে বস্তুর অবস্থার পরিবর্তন ঘটলে শক্তির যে স্থানান্তর ঘটে তাই হচ্ছে কাজ।

             এক্ষেত্রে সম্পন্ন কাজ (W) = স্থানান্তরিত যান্ত্রিক শক্তি (E) 

শক্তির একটি বিশেষ তাৎপর্য আছে জীববিজ্ঞান এবং স্বাস্থ্যবিজ্ঞানে। আমরা খাদ্য গ্রহণ করি। খাদ্য হতে বিপাকীয় প্রক্রিয়া মানুষ শক্তি লাভ করে। এই শক্তি মানুষকে কাজ করার সামর্থ্য যোগায়। খাদ্য হতে মানুষ যে শক্তি গ্রহণ করে তা কাজ, তাপীয় শক্তি এবং ফ্যাট সঞ্চয়ে রূপান্তরিত হয়। যে ব্যক্তি বেশি শক্তি লাভ করে তার কাজ করার সামর্থ্য বেশি হয়। অর্থাৎ কাজ এবং শক্তি পরস্পরের পরিপূরক। শক্তির একক জুল।

পদার্থ ও শক্তির মধ্যে পার্থক্য:

আমাদের চারপাশে নানারকম জিনিস রয়েছে। যেমন- চেয়ার, টেবিল, মাটি, পানি, বায়ু, লোহা ইত্যাদি। অন্যদিকে পদার্থ ও শক্তির মধ্যে পার্থক্য নিচে আলোচনা করা হয়েছে-

১। যার ওজন আছে, যা স্থান দখল করে এবং বল প্রয়োগে বাধা সৃষ্টি করে তাকে পদার্থ বলে। অন্যদিকে কাজ করার ক্ষমতা বা সামর্থ্যকে শক্তি বলে।

২। পদার্থের ঘনত্ব আছে।শক্তির কোন ঘনত্ব নাই।

৩। পদার্থকে ধ্বংস কিংবা রূপান্তর করা যায়। অন্যদিকে শক্তিকে ধ্বংস বা সৃষ্টি করা যায় না। অন্যদিকে শুধু এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় রূপান্তর করা যায়।

৪। পদার্থের এর তিনটি দশা বিদ্যমান। অন্যদিকে শক্তির নানান দশা থাকে।

৫। পদার্থের উদাহরণ : পানি, বাতাস, মাটি ইত্যাদি। অন্যদিকে শক্তির উদাহরণ : তাপ, আলোক ইত্যাদি।