প্রাকৃতিক পরিবেশ (Natural Environment):
প্রাকৃতিক পরিবেশ অথবা প্রাকৃতিক জগত বলতে সমগ্ৰ জীবিত এবং প্রাণহীন বস্তুর স্বাভাবিক অবস্থানকে বুঝায়, এক্ষেত্রে এটা মোটেও কৃত্রিম নয়।এই শব্দটি প্রায়শই পৃথিবীতে অথবা পৃথিবীর কিছু অংশে ব্যবহৃত হয়। সমস্ত প্রজাতি, জলবায়ু, আবহাওয়া এবং প্রাকৃতিক সম্পদ এই পরিবেশের অন্তর্ভুক্ত যেটা মানুষের বাঁচা ও অর্থনৈতিক কার্যকলাপকে প্রভাবিত করে। অর্থাৎ সহজভাবে বলা যায় প্রকৃতির দেওয়া পরিবেশকেই প্রাকৃতিক পরিবেশ বলে।
পৃথিবীর আকাশ, বাতাস, পাহাড় পর্বত, নদনদী, পানি, মাটি, পশুপাশি, গ্রহ, উপায়, চন্দ্র, সূর্য প্রভৃতি প্রকৃতির দান। এসব প্রকৃতির দানের ওপর মানুষ তার নিজস্ব বুদ্ধি ও শ্রমশক্তির প্রয়োগ করে সভ্যতার শানাবিধ উপাদান ও উপকরণ সৃষ্টি করেছে। প্রাকৃতিক পরিবেশের ওপর মানুষের কোনো হাত নেই। প্রকৃতিই এ পরিবেশ সৃষ্টি করে।
মানুষের তৈরি পরিবেশ (Man Made Environment):
মানুষের তৈরি সকল উপাদান নিয়ে মানুষের তৈরি বা কৃত্রিম পরিবেশ সৃষ্টি হয়। মানুষের তৈরি পরিবেশের উপাদান মানুষ তৈরি করে থাকে। তাছাড়া মানুষের তৈরি পরিবেশ প্রাকৃতিক পরিবেশের ওপর নির্ভর করে। যেমন: ঘরবাড়ি, আসবাবপত্র, কাপড়–চোপড়, রাস্তা–ঘাট, বাস, ট্রেন, নৌকা ইত্যাদি, এসকল উপাদান নিয়েই গড়ে উঠেছে মানুষের তৈরি পরিবেশ। আর মানুষের তৈরি উপাদান হলো: ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, চেয়ার, টেবিল, আসবাবপত্র, কাপড়–চোপড়, বিদ্যালয়, যানবাহন ইত্যাদি।
প্রাকৃতিক ও মানুষের তৈরি পরিবেশের মধ্যে পার্থক্যঃ
প্রাকৃতিক পরিবেশ অথবা প্রাকৃতিক জগত বলতে সমগ্ৰ জীবিত এবং প্রাণহীন বস্তুর স্বাভাবিক অবস্থানকে বুঝায়। প্রাকৃতিক ও মানুষের তৈরি পরিবেশের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-
১। আমাদের প্রকৃতির সকল উপাদান নিয়ে তৈরি হয়েছে আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশ। অন্যদিকে, মানুষের তৈরি সকল উপাদানের সমন্বয়ে মানুষের তৈরি পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
২। প্রাকৃতিক পরিবেশের উপাদান মানুষ তৈরি করতে পারে না। অন্যদিকে, মানুষের তৈরি পরিবেশের উপাদান মানুষ তৈরি করে থাকে।
৩। প্রাকৃতিক পরিবেশ মানুষের তৈরি পরিবেশের উপর নির্ভরশীল নয়। অন্যদিকে, মানুষের তৈরি পরিবেশ প্রাকৃতিক পরিবেশের ওপর নির্ভর করে।
৪। মানুষের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে প্রাকৃতিক পরিবেশের গুরুত্ব অপরিসীম। অন্যদিকে, মানুষের তৈরি পরিবেশের উপাদান ছাড়াও মানুষ বাঁচতে পারবে।
৫। প্রাকৃতিক পরিবেশের উপাদান হলো: গাছপালা, পশুপাখি, মাটি, পানি, বায়ু, সূর্যের আলো ইত্যাদি। অন্যদিকে, মানুষের তৈরি পরিবেশের উপাদান হলো: ঘরবাড়ি, দালানকোঠা, রাস্তাঘাট, বিদ্যালয়, কাপড়-চোপড়, যানবাহন ইত্যাদি।