গ্রামেগঞ্জে হাটে বাজারে এখন সুগন্ধি দেশি সাগরকলা চোখে পড়ে না বললেই চলে। তার জায়গা এখন নেপালী কলার দখলে। কিন্তু কেন নেপালী কলার কাছে দেশীয় সুগন্ধি সাগরকলা মার খাচ্ছে? ফুড কেমিস্ট্রি জার্নালের তথ্যানুসারে, সারা বিশ্বের প্রায় ৩০০-র বেশি জাতের কলার চাষ হয়ে থাকে। যার প্রায় সবটাই উৎপাদন হয় এশিয়ার গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এলাকায়। এর মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতেই কলার উৎপাদন ও চাষ সবচেয়ে বেশি হয়। একটি কলায় যে পরিমাণ পুষ্টিগুণ থাকে, তা দিয়ে সহজেই শরীরের জন্য দৈনন্দিন পুষ্টি চাহিদার অনেকখানি পূরণ করা যায়। আর বিশ্বজুড়ে কলার যে জনপ্রিয়তা, তাতে যেকোনো সময় মানুষের পছন্দের তালিকায় ডিমকে ছাড়িয়ে শীর্ষে কলার নাম উঠে আসতেই পারে।
নেপালী ও সাগর কলা এর মধ্যে পার্থক্যঃ
নেপালী কলার ভিরে কেন দেশীয় সাগরকলা প্রায় হারিয়ে যাচ্ছে? নেপালী ও সাগর কলা এর মধ্যে পার্থক্য কি কি তা নিচে আলোচনা করা হয়েছে-
বাজারে অনেক জায়গায় নেপালী কলা ‘নেপালী সাগরকলা’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। দেশীয় সাগরকলার সবচেয়ে বেশি আবাদ হয় নরসিংদী, দিনাজপুরে, নীলফামারি, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও এলাকায়। আবহাওয়াভেদ ও মাটিভেদের কারণে একেক জেলার কলা একেক সময় পাওয়া যায়।
বর্তমানে দেশী সাগরকলার পাশাপাশি চাষ বেড়েছে নেপালী কলার। এই কলা চাষের সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে এর ফলন ভালো হয় এবং রোগের আক্রমণ তুলনামূলকভাবে কম হয়। নেপালী কলার ফলন বেশি হয় মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, টাঙ্গাইল, চুয়াডাঙ্গা এলাকায়।
স্বাদের বিবেচনায় দেশীয় সাগরকলার স্বাদ ও গন্ধ তুলনামূলক বেশি। দেশীয় সাগরকলার খোসা ছাড়ালে অদ্ভুত সুবাসে চারপাশ ম ম করতে থাকে। স্বাদের মধ্যে ভিন্নতা থাকলেও দেশী সাগরকলা আর নেপালী কলার বাহ্যিক সৌন্দর্য অনেকটা একইরকম। তবে দেশি সাগরকলার দিকে ভালো করে তাকালে দেখা যাবে, এই কলার মাথার অংশ কিছুটা চিকন; অন্যদিকে নেপালী কলার মাথা অপেক্ষাকৃত মোটা।
দেশীয় সাগরকলার নিচের অংশ কিছুটা ধারালো থাকে, অন্যদিকে নেপালী কলার নিচের অংশ কিছুটা ভোঁতা থাকে।
তবে বাজারে নেপালী কলা নামে কোনো কলা বিক্রি হয় না বললেই চলে। কেউ চিনুক আর না চিনুক নেপালী কলাকে এখন সাগর কলা নামেই বিক্রি করা হচ্ছে।