কোনোদিন ভেবে দেখেছেন, কেন আমরা ‘ন’-কে ‘দন্ত্য ন’ এবং ‘ণ’-কে ‘মূর্ধন্য ণ’ বলে ডাকি? কারণ একটাই, পার্থক্য করার জন্য। আমরা ‘ত’-কে তো আর ‘দন্ত্য ত’ বলি না, আর ‘ট’-কেও ‘মূর্ধন্য ট’ ডাকি না। কারণ বাংলার ধ্বনিবিজ্ঞান অনুযায়ী দুটোর উচ্চারণ দিয়েই পার্থক্যটা স্পষ্ট হয়ে যায়। তবু বাংলায় ‘ন’ এবং ‘ণ’-তে উচ্চারণগত তেমন কোনো পার্থক্য নেই। তুবও এদের মধ্যে কিছু পার্থক্য আছে। ‘ন’ ও ‘ণ’-এর মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপে ব্যাখ্যা করা হয়েছে-
ন ও ণ -এর মধ্যে পার্থক্য:
বাংলা বর্ণমালায় ণ ও ন থাকলে উচ্চারণের কোন পার্থক্য নেই। উচ্চারণ স্থান অনুযায়ী উভয়ের সামান্য পার্থক্য আছে। মূর্ধন্য-ণ ক্ষেত্রবিশেষষে ট-বর্গীয় ধ্বনি ট, ঠ, ড, ট-এর পূর্বে যুক্তাক্ষর হিসেবে বসে : কণ্টক, কণ্ঠ, দ-। এসব ক্ষেত্রে ‘ণ’ হচ্ছে দন্তমূলীয় ন ধ্বনিমূলের মূর্ধন্য সহধ্বনি এবং উচ্চারণগত দিক দিয়ে মূর্ধন্যকৃত। দন্ত-ন ত-বর্গীয় ধ্বনি ত, থ, দ, ধ-এর পূর্বে যুক্তাক্ষর হিসেবে বসে : দন্ত, পন্থা, অন্ত বন্ধ, দ্বন্ধ।
এসব শব্দের ন হচ্ছে দন্তমূলীয় ন ধ্বনিমূলের দন্ত সহধ্বনি এবং উচ্চারণের দিক দিয়ে দন্ত। ণ ও ন-এর মধ্যে উচ্চারণে সামান্য পার্থক্য আছে। যদিও বাঙালিরা উচ্চারণে সে পার্থক্য করতে পারে না। পার্থক্য লিখিত রূপে ও অর্থগত দিক থেকে :
পণ (পন)
তরুণ (তোরুন্)
মন (মোন)
গমন (গমোন)
তপন (তপোন)
সরণী (শরোনি)
মনন (মনোন)
পাষাণ (পাষান)
চরণ (চরোন)