Site icon Parthokko.com.bd | পার্থক্য | Difference Between

পেডিমেন্ট ও বাজাদার মধ্যে পার্থক্য

পেডিমেন্ট ও বাজাদা

পেডিমেন্ট (Pediment):

পেডিমেণ্ট দুটি শব্দের সমন্বয়ে গঠিত। জার্মান শব্দ “Pedi”= পাদদেশ “Mont”= পর্বত অর্থাৎ Pediment=পর্বতের পাদদেশে। পেডিমেণ্টের সম্মুখ ভাগে সঞ্চয়জাত যে সমতলভূমি গঠিত হয়, তাকে বাজাদা বলে। অর্থাৎ পেডিমেণ্ট শব্দের অর্থ পর্বতের পাদদেশের ঢালু অংশকে বোঝায়। উচ্চভূমির সম্মুখভাগের পশ্চাৎ সরনের ফলে উচ্চভূমি সমান্তরাল ভাবে কর্তিত হয়ে পেডিমেন্ট সৃষ্টি করে।

পেডিমেণ্ট গুলি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রস্তর খণ্ড, বালি, পলি দ্বারা আবৃত থাকতে পারে আবার উন্মুক্তও থাকতে পারে। পেডিমেণ্ট গুলি মৃদু ঢালে বিস্তৃত ও ভূমিভাগ অবতল প্রকৃতির। আবহবিকার, পুঞ্জিতক্ষয়, জলধারা ও বায়ু প্রবাহ এগুলির যৌথ কাজের ফলে পেডিমেণ্ট সৃষ্টি হয়।

বাজাদা (Bajada):

মরু অঞ্চলে পর্বতের পাদদেশে বায়ুপ্রবাহ ও জলধারার মিলিত কার্যের ফলে নানা রকম ভূমিরূপ গঠিত হয়, বাজাদা হল এরূপ একটি ভূমিরূপ। স্প্যানিশ শব্দ Bajada থেকে ইংরেজিতে Bajada শব্দটির উৎপত্তি, যার অর্থ হল একাধিক পলল শঙ্কুযুক্ত সমতল ভূমি । সাধারণত মরু অঞ্চলে পর্বতের পাদদেশে যে সামান্য ঢালবিশিষ্ট শিলাময় ভূমি বা পেডিমেন্ট থাকে, তার প্রান্তভাগে বায়ু ও জলধারার মিলিত কার্যের দ্বারা নুড়ি, কাঁকর, বালি, কাদা প্রভৃতি বাহিত হয়ে ও সঞ্চিত হয়ে যে সমপ্রায়ভূমি বা সমতলক্ষেত্র গঠিত হয়, তাকে বাজাদা বলে ।

বাজাদা সমভূমির ঢাল অত্যন্ত মৃদু প্রকৃতির হয়ে থাকে । আফ্রিকার সাহারা মরুভূমির উত্তর-পশ্চিমে অ্যাটলাস পর্বতের পাদদেশে বাজাদা দেখা যায়।

পেডিমেন্ট ও বাজাদার মধ্যে পার্থক্যঃ

মরু ক্ষয়চক্রের ফলে সৃষ্ট ভূমিরুপগুলির মধ্যে অন্যতম ভূমিরূপ হল পেডিমেন্ট ও বাজাদা। পেডিমেন্ট ও বাজাদার মধ্যে পার্থক্য নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হল-

১। পেডিমেন্ট দুটি শব্দের সমন্বয়ে গঠিত। ‘পেডি’ শব্দের অর্থ পাদদেশ এবং ‘মেন্ট’ শব্দটি এসেছে মাউন্ট থেকে, যার অর্থ পাহাড়। সাধারণ অর্থে পেডিমেন্ট কথার অর্থ হল পাহাড়ের পাদদেশের সমভূমি। অন্যদিকে, পেডিমেন্টের সম্মুখভাগে সঞ্চয়জাত যে সমভূমি গঠিত হয় তাকে বাজাদা বা বাহাদা বলে।

২। উচ্চভূমির সম্মুখভাগের পশ্চাৎ অপসারণের ফলে উচ্চভূমির সম্মুখভাগ সমান্তরালভাবে কর্তিত হয়ে পেডিমেন্ট সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে, মরু অঞ্চলে পেডিমেন্টের সম্মুখভাগের অবনমিত অংশে জলধারা-বাহিত বিভিন্ন আকৃতির শিলাখণ্ড, নুড়ি, কাঁকর, বালি, পলি ও কাদা প্রভৃতি সঞ্চিত হয়ে বাজাদা সৃষ্টি হয়।

৩। পেডিমেন্টগুলি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রস্তর খণ্ড, বালি ও পলি দ্বারা আবৃত থাকতে পারে, আবার উন্মুক্তও থাকতে পারে। পেডিমেন্টগুলি মৃদু ঢালে বিস্তৃত। ভূমিভাগ অবতল প্রকৃতির। অন্যদিকে, বাজাদা সঞ্চয়জাত সমভূমি। এই অংশে ভূমির ঢাল এত কম যে একে সমভূমি বলে মনে হয়। ভূমির ঢাল সামান্য উত্তল প্রকৃতির।

৪। আবহবিকার, পুঞ্জিত স্বলন, জলধারা ও বায়ুপ্রবাহ- এগুলির যৌথ কার্যের ফলে পেডিমেন্ট সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে, জলধারার কার্যের ফলে পেডিমেন্টের সম্মুখে শিলাখণ্ড, কাঁকর, বালি ও পলি সঞ্চিত হয়ে বাজাদার সৃষ্টি হয়।

৫। আবৃত পেডিমেন্ট, মিলিত পেডিমেন্ট, ব্যবচ্ছিন্ন পেডিমেন্ট। অন্যদিকে, বাজাদার বিশেষ শ্রেণীবিভাগ নেই।

Exit mobile version