গ্রহ ও নক্ষত্রের মধ্যে পার্থক্য

গ্রহ (Planet):

গ্রহ হচ্ছে জ্যোতি বিজ্ঞানের মহাবিশ্বের এমন একটি বস্তু যেখানে কেবলমাত্র মহাকর্ষ বলের প্রভাবে গোলাকার রূপ ধারণ করে এবং ক্ষমতা রাখে। গ্রহ বলতে জ্যোতির্বিজ্ঞানে মহাবিশ্বের এমন বস্তুকে বোঝানো হয় যার কেবলমাত্র নিজের মহাকর্ষ বলের প্রভাবে গোলাকার রূপ ধারণ করার ক্ষমতা আছে। যার ভর তাপ-নিউক্লীয় বিক্রিয়া শুরু করে সূর্যের মত শক্তি উৎপাদনের জন্য যথেষ্ট নয়, এবং যে তার প্রতিবেশের সব ছোট ছোট বস্তুকে সরিয়ে দিয়েছে বা নিজের মধ্যে অধিগ্রহণ করে নিয়েছে। সাধারণত গ্রহরা কোন না কোন তারা বা নাক্ষত্রিক ধ্বংসাবশেষকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়।

নক্ষত্র (Star):

ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞান ও আর্যদের জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে নক্ষত্র হল চন্দ্রপথের ২৮টি ভাগ যেগুলো “চন্দ্রনিবাস” হিসেবে পরিচিত । সূর্যের গতিপথকে যেমন ১২ ভাগে ভাগ করে প্রতি ভাগের নাম রাখা হয়েছে রাশি তেমনি চন্দ্রপথকে ২৮ ভাগে ভাগ করে প্রতি ভাগের নাম রাখা হয়েছে নক্ষত্র। এছাড়া তারা, তারকা বা নক্ষত্র বলতে মহাশূন্যে প্লাজমা দশায় অবস্থিত অতি উজ্জ্বল এবং সুবৃহৎ গোলাকার বস্তুপিণ্ডকেও বোঝায়।

উচ্চ তাপে তারা নিউক্লীয় সংযোজন বিক্রিয়ার মাধ্যমে ক্রমাগত নিজের জ্বালানি উৎপন্ন করে। জ্বালানি উৎপন্ন করে রাতের আকাশে জ্বলজ্বল করা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আলোকবিন্দুর সৃষ্টি করে থাকে। এই সব আলোকবিন্দুর মধ্যে কোনোটি মিটমিট করে জ্বলে আবার কোনোটি স্থির হয়ে জ্বলে। মিটমিট করা এইসব আলোকবিন্দুকে তারা, স্টার কিংবা নক্ষত্র বলা হয়।

গ্রহ ও নক্ষত্রের মধ্যে পার্থক্যঃ

গ্রহ হচ্ছে জ্যোতি বিজ্ঞানের মহাবিশ্বের এমন একটি বস্তু যেখানে কেবলমাত্র মহাকর্ষ বলের প্রভাবে গোলাকার রূপ ধারণ করে। গ্রহ ও নক্ষত্রের মধ্যে পার্থক্য নিচে দেখানো হলো-

১। মহাবিশ্বে সৃষ্টির সময় অসংখ্য ধূলিকণা ও গ্যাসের মহাজাগতিক মেঘ বা ণীহারিকা থেকে প্র্রকাণ্ড আকারের জ্বলন্ত নক্ষত্রের সৃষ্টি। অন্যদিকে নক্ষত্র সৃষ্টির পর মহাবিস্ফোরনের ফলে নক্ষত্র থেকে বিভিন্ন গ্রহের সৃষ্টি হয়।

২। নক্ষত্রদের নিজস্ব আলোও তাপ রয়েছে। নক্ষত্রগুলি নিউক্লিয় ভিভাজনের মাধ্যমে আলো ও তাপের সৃষ্টি করে। অন্যদিকে গ্রহদের নিজস্ব আলো ও তাপ নেই, এরা নক্ষত্রের আলোয় আলোকিত ও উত্তপ্ত হয়।

৩। নক্ষত্র আকাশে মিটমিট করে জ্বলে। অন্যদিকে নক্ষত্রের আলোয় আলোকিত হয় বিধায় গ্রহের আলো স্থির।

৪। নক্ষত্র গুলো হয় আকারে বৃহৎ এবং জ্বলন্ত গ্যাসীয় পিণ্ড । অন্যদিকে গ্রহ গুলো অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র এবং শীতল।

৫। নক্ষত্রগুলো স্থির থাকে। ফলে নক্ষত্রদের পারস্পারিক দূরত্ব সব সময় একই থাকে। অন্যদিকে গ্রহগুলো নক্ষত্রের চারদিকে প্রদক্ষিণ করে থাকে। ফলে তাদের দূরত্বের বৃদ্ধি ঘটে।

৬। নক্ষত্রগুলোর নিজস্ব কক্ষপথের পরিধি বিশাল হয়ে থাকে । অন্যদিকে গ্রহগুলোর নিজস্ব কক্ষপথের পরিধি তুলনামুলকভাবে অনেক ছোট।


পার্থক্য ফেসবুক পেজ
ভূগোল সংক্রান্ত আরো পার্থক্য পড়ুনঃ Geography

আরোও পার্থক্য পড়ুনঃ রম্বস ও সামান্তরিকের মধ্যে পার্থক্যকার্ডিয়াক এবং কঙ্কাল পেশীর মধ্যে পার্থক্যসম্পাদ্য এবং উপপাদ্যের মধ্যে পার্থক্যতথ্য ও উপাত্তের মধ্যে পার্থক্যগণিত এবং ফলিত গণিতের মধ্যে পার্থক্য