প্রোটোজোয়া (Protozoa):
এককোষী আণুবীক্ষণিক প্রাণীদের প্রোটোজোয়া বা আদ্যপ্রাণী বলা হয়। তারা এককোষী জীব। তারা যেমন ইউক্যারিওটস হয়, তাদের সাইটোপ্লাজমে একটি নিউক্লিয়াস থাকে। তবে কিছু কিছু প্রোটোজোয়ানদের সাইটোপ্লাজমে একাধিক নিউক্লিয়াস থাকে। এছাড়াও, তাদের সাইটোপ্লাজমে দুটি অঞ্চল রয়েছে যা ইকটোপ্লাজম এবং এন্ডোপ্লাজম নামে পরিচিত। এই এককোষী প্রাণীরা জীবনের জন্য জরুরি যাবতীয় কাজকর্ম কোষের মধ্যেই চালাতে পারে, যা অনেক উচ্চতর শ্রেণীর প্রাণীর ক্ষেত্রে বিশেষ অঙ্গ বা অঙ্গতন্ত্র সম্পাদন করে।
প্রাণিজগতের এ উপসর্গটি নিশ্চিতই বহুজাতিজ (polyphylletic)। এটি জীবরাসায়নিক বিশ্লেষণ দ্বারা প্রমাণিত এবং তা দেখিয়েছে যে প্রোটোজোয়ার কোন কোন পর্ব (phylum) অন্যান্য প্রোটোজোয়ার চেয়ে সুনির্দিষ্ট এককোষী উদ্ভিদের সঙ্গেই অধিকতর ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। ইতিহাসের হিসাবে ১৭শ শতকের শেষে ফন লিউয়েনহুক (Van Leeuwenhoek) এটি আবিষ্কার করলেও প্রোটোজোয়াঘটিত রোগের তথ্য চীন দেশের সুঙ-বংশের শাসনকালেও জানা ছিল। বর্তমানে এদের জানা প্রজাতি সংখ্যা প্রায় ৪০,০০০, তবে সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে।
ব্যাকটেরিয়া (Bacteria):
গ্রিক শব্দ Bakterion = Little rod থেকে ব্যাকটেরিয়া শব্দটি এসেছে। যার অর্থ ক্ষুদ্র দন্ড। ব্যাকটেরিয়া (এক বচনে ব্যাকটেরিয়াম) সাধারণত ক্লোরোফিলবিহীন, প্রাককেন্দ্রিক এককোষী ক্ষুদ্র আণুবীক্ষণিক জীব। গাঠনিক উপাদান ও পুষ্টি পদ্ধতির জন্য ব্যাকটেরিয়াকে উদ্ভিদ বলা হয়। ব্যাকটেরিয়া হলো এক প্রকারের এককোষী অণুজীব। এরা এবং (আরকিয়ারা) হল প্রোক্যারিয়ট (প্রাক-কেন্দ্রিক) অর্থাৎ এদের কোষে সংগঠিত নিউক্লিয়াস নেই, আছে ঝিল্লিহীন নিউক্লিয়য়েড, যার মধ্যে রৈখিক ক্রোমোজোম নেই আছে।
বৃত্তাকার ডিএনএ, ঝিল্লি (মেমব্রেন) ওয়ালা কোন অঙ্গাণু নেই এবং নেই কোন সাইটোকঙ্কাল। মানুষের দেহে কয়েক ট্রিলিয়ন কোষআছে, তবে ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যা এর থেকে ১০-১০০ গুণ বেশি। গ্রাম স্টেইন দ্বারা দুরকম ব্যাক্টেরিয়াকে সাধারণতঃ আলাদা করা যায়।
প্রোটোজোয়া এবং ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে পার্থক্য:
এককোষী আণুবীক্ষণিক প্রাণীদের প্রোটোজোয়া বা আদ্যপ্রাণী বলা হয়। তারা এককোষী জীব। প্রোটোজোয়া এবং ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-
১। প্রোটোজোয়া হল একটি উপগোষ্ঠী রাজ্যের; প্রোটিস্টা, যা ইউকারিটোস ডোমেনের আওতায় আসে। অন্যদিকে ব্যাকটেরিয়া একটি সম্পূর্ণ করদাতাদের ডোমেন হিসাবে বর্ণনা করা যেতে পারে।
২। প্রোটোজোয়ান ইউক্যারিওটস। অন্যদিকে ব্যাকটেরিয়া প্রোকারিটোস।
৩। প্রোটোজোয়ায় পৃথিবীর ব্যাক্টেরিয়াগুলির প্রাদুর্ভাব অনেক বেশি।
৪। প্রোটোজোয়ান চরমপন্থী নয়। অন্যদিকে ব্যাকটেরিয়া চরমপন্থী ।
৫। প্রোটোজোনের শরীরের আকার সাধারণত ব্যাকটেরিয়া বেশী হয়। অন্যদিকে শরীরের আকার সাধারণত প্রোটোজোনের কম হয়।
৬। সনাক্ত করা ব্যাকটেরিয়া প্রজাতির সংখ্যা প্রোটোজোয়ার চেয়ে কম। অন্যদিকে ব্যাকটেরিয়া প্রজাতির প্রকৃত সংখ্যাটি প্রোটোজোয় প্রজাতির সংখ্যা তুলনায় অনেক বেশি।