সর্বজনীন: “সর্বজনীন” শব্দটি বিশেষ্য পদ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এর অর্থ হল “সকলের জন্য অনুষ্ঠিত, বারোয়ারি, সর্বসাধারণের সহায়তায় কৃত, সকলের জন্য মঙ্গলকর বা কল্যাণকর, সবার জন্য হিতকর, সবার মঙ্গলের জন্য কৃত, সকলের জন্য উদ্দিষ্ট।” যেমন:
i. ভালোবাসা সর্বজনীন বিষয়।
ii. ফল সর্বজনীন খাদ্য।
iii. মানবাধিকার সর্বজনীন অধিকার হিসেবে স্বীকৃত।
সার্বজনীন: এর মানে সকলের মধ্যে প্রবীণ, জ্যেষ্ঠ। যেমন:
i. সার্বজনীন দূর্গোৎসব।
ii. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের সার্বজনীন নেতা।
তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সর্বজনীন অর্থ প্রকাশ করতে গিয়ে ভুল করে সার্বজনীন লেখা হয়ে থাকে। সর্বজনীন লেখা সব ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে পারে কিন্তু সার্বজনীন লেখা সব ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। যেমন: কোন কিছু শ্রেষ্ঠ বুঝাতে হলে তা সার্বজনীন লেখা ভুল হবে।
সর্বজনীন ও সার্বজনীনের মধ্যে পার্থক্যঃ
“সর্বজনীন” ও “সার্বজনীন” শব্দ দুটি একই অর্থে ব্যবহার করা হয়। তবে, সঠিক অর্থ বোঝাতে শব্দ দুটির মধ্যে পার্থক্য জানা উচিত। তা নিম্নরূপ-
১। ‘সর্বজনীন’ শব্দের আভিধানিক অর্থ, সর্বসাধারণের জন্য অনুষ্ঠিত, বারোয়ারি, সকলের জন্য মঙ্গলকর বা কল্যাণকর, সবার জন্য হিতকর, সবার মঙ্গলের জন্য কৃত, সকলের জন্য উদ্দিষ্ট। অন্যদিকে, ‘সার্বজনীন’ শব্দের আভিধানিক অর্থ ‘সবার মধ্যে প্রবীণ, জ্যেষ্ঠ’।
২। বাক্যে বিশেষ্য হিসেব ব্যবহৃত সংস্কৃত ‘সর্বজনীন’ শব্দের আভিধানিক অর্থ, সর্বসাধারণের জন্য অনুষ্ঠিত, বারোয়ারি, সর্বসাধারণের সহায়তায় কৃত, সকলের জন্য মঙ্গলকর বা কল্যাণকর, সবার জন্য হিতকর, সবার মঙ্গলের জন্য কৃত, সকলের জন্য উদ্দিষ্ট। অন্যদিকে, বাক্যে বিশেষণ হিসেব ব্যবহৃত ‘সার্বজনীন’ শব্দের আভিধানিক অর্থ ‘সবার মধ্যে প্রবীণ, জ্যেষ্ঠ’।
৩। “সর্বজনীন” শব্দটি সাধারণত কোন কিছুর ব্যাপক প্রসার বা কল্যাণকর প্রভাব বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। অন্যদিকে, “সার্বজনীন” শব্দটি সাধারণত কোন ব্যক্তি বা বিষয়ের বয়স বা অভিজ্ঞতা বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।
৪। উদাহরণস্বরূপ, “মানবাধিকার সর্বজনীন অধিকার” বাক্যটিতে “সর্বজনীন” শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে কারণ মানবাধিকার সকল মানুষের অধিকার, যা কোন নির্দিষ্ট গোষ্ঠী বা ব্যক্তির জন্য সীমাবদ্ধ নয়। অন্যদিকে, “জিম্বাবুয়ের বর্তমান রাষ্ট্রপতি রবার্ট মুগাবে ( জন্ম ১৯২৪ খ্রিষ্টাব্দের ২১ ফেব্রুয়ারি ) সার্বজনীন নেতা” বাক্যটিতে “সার্বজনীন” শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে কারণ রবার্ট মুগাবে জিম্বাবুয়ের সবচেয়ে বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা নেতা।