কুইক লাইম (Quick lime):
ক্যালসিয়াম অক্সাইড সাধারণত চুন বা কুইক লাইম নামে পরিচিত, বহুল ব্যবহৃত একটি রাসায়নিক যৌগ। কক্ষতাপমাত্রায় এটি সাদা, ক্ষারীয়, স্ফটিকাকার কঠিন পদার্থ। ক্যালসিয়াম অক্সাইড নির্মাণ সামগ্রী যেমন সিমেন্টের সাথে মিশ্রিত করলে কোনোরূপ বিক্রিয়া করে না এজন্য একে ফ্রি লাইম বলা হয়। ক্যালসিয়াম অক্সাইড তুলনামূলকভাবে সস্তা।
সাধারণত চুনাপাথর বা ঝিনুকের তাপীয় বিয়োজনে ক্যালসিয়াম অক্সাইড পাওয়া যায়। অর্থাৎ ঝিনুক বা চুনাপাথরকে দহন করলে চুন পাওয়া যায়। চুনাপাথর বা ঝিনুকের মধ্যে ক্যালসিয়াম কার্বনেট (CaCO3) থাকে। ৮২৫ °সে (১,৫১৭ °ফা),এর বেশি তাপমাত্রায় দহন করে চুন তৈরীর প্রক্রিয়াকে ক্যালসিনেশান বা চুন পোড়ানো বলা হয়। দহনে চুন এবং এক অণু কার্বন ডাই অক্সাইড উৎপন্ন হয়। CaCO3(s) → CaO(s) + CO2(g)
উৎপন্ন ক্যালসিয়াম অক্সাইড অস্থিতিশীল, বাতাসের CO2 সাথে বিক্রিয়া করে এক সময়ে এটা ক্যালসিয়াম কার্বনেট তৈরী করে। এজন্য উৎপন্ন চুনকে পানির সাথে মিশিয়ে রাখা হয়।
লাইম ওয়াটার (Lime water):
চুনে পানি যোগ করার ফলে চুন ও পানির মধ্যে রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে ক্যালসিয়াম হাইড্রোক্সাইড উৎপন্ন হয়। CaO + H2O Ca(OH)2 চুন পানি ক্যালসিয়াম হাউড্রোক্সাইড উৎপন্ন Ca(OH)2 কুইক লাইম নামে পরিচিত। এই বিক্রিয়ায় প্রচুর পরিমাণে তাপশক্তি উৎপন্ন হয়, যার ফলে পানি ফুটতে থাকে। কুইম লাইম বা Ca(OH)2 পানিতে খুব অল্প পরিমাণে দ্রবীভূত হয়। আর পানিতে Ca(OH)2-এর সম্পৃক্ত দ্রবণকেই চুনের পানি বা লাইম ওয়াটার বলে।
চুনে থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টগুলি আপনার হৃদয়ের পক্ষেও ভাল। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টগুলি ধমনী এবং রক্তসঞ্চালনের স্বাস্থ্যের উন্নয়নে সহায়তা করে। যেহেতু ধমনীগুলি আপনার হৃদয় এবং অন্যান্য অঙ্গগুলিতে রক্ত বহন করার জন্য দায়ী, তাই তাদের সুস্থ রাখার ফলে হৃদরোগের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।চুন দ্বারা সরবরাহিত ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি আপনার প্রতিরোধ ব্যবস্থাটিকে একটি স্বাস্থ্যকর বাড়াতে সহায়তা করতে পারে।
চুনে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড আপনার বিপাককে আরও বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করতে পারে। পানিতে চুন যুক্ত করা হজমে সহায়তা করতে পারে। চুনে এমন যৌগ থাকে যা পেটে হজমের ক্ষরণকে উদ্দীপিত করতে সহায়তা করে। এছাড়াও, চুনের রসে থাকা অ্যাসিড লালা খাবার ভাঙতে সহায়তা করে।
কুহক লাইম ও লাইম ওয়াটারের মধ্যে পার্থক্যঃ
চুনে পানি যোগ করার ফলে চুন ও পানির মধ্যে রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে ক্যালসিয়াম হাইড্রোক্সাইড উৎপন্ন হয়। কুহক লাইম ও লাইম ওয়াটারের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-
১. ক্যালসিয়াম অক্সাইড সাধারণত কুইক লাইম নামে পরিচিত। অন্যদিকে, পানিতে Ca(OH)2 এর সম্পৃক্ত দ্রবণকেই লাইম ওয়াটার বলে।
২. কুইক লাইমকে চুন বলেও আখ্যায়িত করা হয়। অন্যদিকে, লাইম ওয়াটারকে চুনের পানি বলা হয়।
৩. কুইক লাইম পানিতে খুব অল্প পরিমাণে দ্রবীভূত হয়। অন্যদিকে, লাইম ওয়াটার পানিতে পুরোপুরিভাবে দ্রবীভূত হয়।
৪. চুনাপাথরকে উচ্চ তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করলে কুইক লাইম উৎপন্ন হয়। অন্যদিকে, পানি ও চুনের দ্রবনে তলানী বানিয়ে উপরের স্বচ্ছ পানিকে লাইম ওয়াটার বলা হয়।
৫. কুইক লাইমের সংকেত CaO। অন্যদিকে, লাইম ওয়াটারের সংকেত Ca(OH)2।