রাস্টার গ্রাফিক্স (Raster graphics):
একটি রাস্টার গ্রাফিক্স ছবি, বা ডিজিটাল ছবি, বা বিটম্যাপ (bitmap) হল এক ধরনের উপাত্ত ফাইল বা সংগঠন যাতে সাধারণত কম্পিউটার মনিটর, কাগজ বা অন্য কোন পর্দায় প্রদর্শনযোগ্য পিক্সেল বা রঙবিন্দুর আয়তাকার গ্রিড সংক্রান্ত তথ্য রক্ষিত থাকে। প্রতিটি পিক্সেলের রঙ আলাদাভাবে সংজ্ঞায়িত হয়। উদাহরণস্বরূপ- আরজিবি রঙ জগতে বর্ণ পিক্সেল গুলি তিনটি বিট দিয়ে নির্দেশ করা হয়, যাদের প্রতিটি লাল, সবুজ ও নীল রঙের মান নির্দেশ করে। অন্যদিকে সাদা কালো ছবির প্রতিটি পিক্সেলের জন্য মাত্র একটি বিট বরাদ্দ থাকে।
অসংখ্য পিক্সেল বা বিটম্যাপি নিয়ে রাস্টার ইমেজ তৈরী হয় ফলে ফাইল সাইজ বড় হয়। এত ছবির রঙের ভিন্নতা থাকলেও জুম করে কা কাছ থেকে দেখলে ছবির কোয়ালিটি নষ্ট হয়ে যায় বা ছবি অস্পষ্ট দেখা যায়। সাধারন কিছু রাস্টার গ্রাফিক্স বা ইমেজ ফরম্যাট হচ্ছে jpg, gif, png
ভেক্টর গ্রাফিক্স (Vector graphics):
গাণিতিক রেখা এবং বক্ররেখার মাধ্যমে তৈরি গ্রাফিক্সকে ভেক্টর গ্রাফিক্স বলা হয়। জ্যামিতিক বৈশিষ্ট্য অনুসারে ভেক্টর গ্রাফিক্স বর্ণিত হয়। তাই এটিকে স্থানান্তর, সাইজ পরিবর্তন অথবা রং পরিবর্তন করলেও গ্রাফিক্সের মানের কোন পরিবর্তন হয় না। ভেক্টর গ্রাফিক্স হয় কম্পিউটার গ্রাফিক্স শর্তাবলী সংজ্ঞায়িত করা হয় যে চিত্র পয়েন্ট অন এ কার্তেসিয়ান বিমানযা দ্বারা সংযুক্ত রয়েছে লাইন এবং বক্ররেখা গঠন করতে বহুভুজ এবং অন্যান্য আকার। ভেক্টর গ্রাফিক্সের অনন্য সুবিধা রয়েছে রাস্টার গ্রাফিক্স যে বিন্দু, লাইন এবং বক্ররেখা হতে পারে স্কেলড উপরে বা নীচে যে কোনও রেজোলিউশন না দিয়ে এলিয়াসিং। পয়েন্টগুলি এর দিক নির্ধারণ করে ভেক্টর পাথ; প্রতিটি পাথের স্ট্রোক রঙ, আকার, বক্রতা, বেধ এবং ভরাটের মান সহ বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য থাকতে পারে।
টাইপ বিশেষ করে ছোট টাইপ তৈরি করার জন্য ভেক্টর গ্রাফিক্স বেশি ব্যবহার করা হয়। বিখ্যাত গ্রাফিক্স সফটওয়্যার নির্মাতা এডোবি ইন কর্পোরেশনের এডোবি ইলাষ্ট্রেটর সফটওয়্যার দিয়ে ভেক্টর গ্রাফিক্স তৈরি করা যায়।
রাস্টার ও ভেক্টর গ্রাফিক্সের মধ্যে পার্থক্যঃ
একটি রাস্টার গ্রাফিক্স ছবি, বা ডিজিটাল ছবি, বা বিটম্যাপ (bitmap) হল এক ধরনের উপাত্ত ফাইল বা সংগঠন। রাস্টার ও ভেক্টর গ্রাফিক্সের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-
১। রাস্টার গ্রাফিক্স তৈরী হয় পিক্সেলের উপর নির্ভর করে। অন্যদিকে, নির্দিষ্ট লাইন বা রেখার উপর ভিত্তি করে তৈরী হয়।
২। রাস্টার গ্রাফিক্স ব্যবহৃত হয় ফটো এডিটিং, অবিরাম অবিচ্ছিন্ন ছবির সাথে রঙের মিশ্রণ নির্ভর ছবি তৈরীতে। অন্যদিকে, বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক লোগো, ড্রয়িং, বিলবোর্ড, ব্যানার, ইলাস্ট্রেশন তৈরীতে ভেক্টর গ্রাফিক্স ব্যবহৃত হয়।
৩। রাস্টার গ্রাফিক্সের কোয়ালিটি মেইনটেইন হয় রেজুলেশন এবং ডাইমেনশন দ্বারা। অন্যদিকে, ভেক্টর গ্রাফিক্সের ব্যাপকতা হলো অসীম আকার পরিবর্তনযোগ্যতা।
৪। রাস্টার গ্রাফিক্স যেকোনো কালার মিশ্রণ ঘটিয়ে ইমেজ তৈরী করতে সক্ষম। অন্যদিকে, ভেক্টর গ্রাফিক্সে রাস্টার গ্রাফিক্স এর সাহায্য ছাড়া কালার ব্লেন্ডস বা মিশ্রণ ইমেজ তৈরী সম্ভব নয়।
৫। রাস্টার গ্রাফিক্সের অসংখ্য বিটম্যাপের জন্য ফাইল সাইজ বড় হয় এবং কম্পিউটার মেমোরিতে বেশি জায়গা দখল করে। অন্যদিকে, ভেক্টর গ্রাফিক্সের ফাইল সাইজ ছোট, কারণ লাইন বা রেখার সাহায্যে গাণিতিক ফর্মুলা ব্যবহার করে কাজ করে।
৬। রাস্টার গ্রাফিক্স পেইন্টিং এর জন্য উপযোগী। অন্যদিকে, ভেক্টর গ্রাফিক্সের ব্যবহার হচ্ছে এটা ড্রয়িং এর জন্য উপযোগী।
৭। রাস্টার গ্রাফিক্সে খরচ তুলনামূলকভাবে কম। অন্যদিকে, ভেক্টর গ্রাফিক্সে রাস্টার গ্রাফিক্স এর তুলনায় খরচ বেশি হয়।
৮। রাস্টার ইমেজকে ভেক্টর ইমেজে রূপান্তর করা একটি জটিল ও কঠিন প্রক্রিয়া। অন্যদিকে, ভেক্টর গ্রাফিক্সকে সহজেই রাস্টার গ্রাফিক্সে রূপান্তর করা যায়।
৯। রাস্টার গ্রাফিক্সের ফাইল টাইপ হচ্ছে- Jpg, gif, png, bmp ইত্যাদি। রাস্টার সফটওয়্যার হলো- ফটোশপ (Photoshop), GIMP ইত্যাদি। অন্যদিকে, ভেক্টর গ্রাফিক্স ফাইল টাইপগুলো হলো- SVG, CDR, Al, pdf ইত্যাদি।