সাধারণ অ্যালজেবরা (Simple Algebra) :
সাধারণ অ্যালজেবরা হলো একটি গণিতের শাখা যা সমতা, পরিমাপ, সমীকরণ, বৈদ্যুতিক মদ্ধে সমীকরণ, এবং সংখ্যাগণিতের মৌলিক গণিত সম্পর্কিত বিভিন্ন গবেষণা বা অধ্যয়ন করে। সাধারণ অ্যালজেবরা গণিতের একটি মৌলিক অংশ হিসেবে প্রথম শিক্ষা ও উচ্চশিক্ষার অংশ হিসেবে প্রয়োজ্য। এটি প্রধানত সংখ্যাগণিতের সাথে ব্যবহৃত হয় যাতে সমীকরণ বা অসমীকরণ সমাধান করা যায়। সাধারণ অ্যালজেবরা বিস্তৃত ও অপেক্ষাকৃত জটিল গাণিতিক পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে বিভিন্ন গাণিতিক বিষয় যােগ, বিয়ােগ, গুণ, ভাগ, ভগ্নাংশ, বর্গমূল, ঘনমূল, সূচক, লগারিদম, কাল্পনিক সংখ্যা, বাস্তব সংখ্যা প্রভৃতি গাণিতিক নিয়মে করা হয়।
সাধারণ অ্যালজেবরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে গণনা, পরিস্থিতির বিশ্লেষণ, নির্দিষ্ট সময়ে সমস্যা সমাধান, ব্যবসায়ে সংখ্যাগণিত, বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।
বুলিয়ান অ্যালজেবরা (Boolean Algebra) :
দুটি বাইনারি সংখ্যার (০, এবং ১) ওপর ভিত্তি করে অন্য সকল প্রকার সংখ্যার প্রদর্শন ও হিসাবনিকাশের বীজগণিতীয় পদ্ধতিকে বুলিয়ান অ্যালজেবরা বলে। অন্যভাবে বলা যায় যে, জর্জ বুল প্রদত্ত যুক্তির ওপর ভিত্তি করে গণিতের যে শাখা উন্মোচিত হয়, তাকে বুলিয়ান অ্যালজেবরা বলা হয়। বুলিয় বীজগণিতে শুধু বুলিয় যোগ এবং গুণ-এর মাধ্যমে সমস্ত অংক করার কাজ করা হয়। যোগ এবং গুণের ক্ষেত্রে বুলিয়ান অ্যালজেবরা কতকগুলো নিয়ম মেনে চলে। এ নিয়মগুলোকেই বুলিয়ান স্বতঃসিদ্ধ বলা হয়।
১৮৫৪ সালে জর্জবুল গণিত ও যুক্তির মধ্যে যে সুসম্পর্ক রয়েছে তা সনাক্ত করতে সক্ষম হন। তার এই বীজগণিতই বুলিয়ান অ্যালজেবরা নামে পরিচিত। গাণিতিক যুক্তি, ডিজিটাল যুক্তি, প্রোগ্রামিং, সেট তত্ত্ব এবং পরিসংখ্যানে বুলিয়ান অ্যালজেবরার ব্যবহার রয়েছে। এটি ডিজিটাল সার্কিট বা ডিজিটাল গেট বিশ্লেষণ এবং সরলীকরণ করতেও ব্যবহৃত হয়। বুলিয়ান অ্যালজেবরা তিন ধরনের মৌলিক যুক্তিমূলক ক্রিয়া সম্পাদন করে। যেমন-
i. অর অপারেশন (OR Operation) বা যৌক্তিক যোগ।
ii. অ্যান্ড অপারেশন (AND Operation) বা যৌক্তিক গুণ।
iii. নট অপারেশন (NOT Operation)।
সাধারণ এবং বুলিয়ান অ্যালজেবরার মধ্যে পার্থক্যঃ
ব্যবহার বিধি ভিন্ন হওয়ায় বুলিয়ান অ্যালজেবরা ও সাধারণ অ্যালজেবরা দুইটি ভিন্নতর গাণিতিক পদ্ধতি। সাধারণ এবং বুলিয়ান অ্যালজেবরার মধ্যে পার্থক্য নিচে দেখানো হয়েছে-
১. সাধারণ অ্যালজেবরা হলো একটি গণিতের শাখা যা সমতা, পরিমাপ, সমীকরণ, বৈদ্যুতিক মদ্ধে সমীকরণ, এবং সংখ্যাগণিতের মৌলিক গণিত সম্পর্কিত বিভিন্ন গবেষণা বা অধ্যয়ন করে।
অন্যদিকে, দুটি বাইনারি সংখ্যার (০, এবং ১) ওপর ভিত্তি করে অন্য সকল প্রকার সংখ্যার প্রদর্শন ও হিসাবনিকাশের বীজগণিতীয় পদ্ধতিকে বুলিয়ান অ্যালজেবরা বলে।
২. বুলিয়ান অ্যালজেবরায় সকল গাণিতিক কর্মকাণ্ড দুইটি পদ্ধতির মাধ্যমে মাত্রা সহ ও দ্রুততার সাথে সম্পাদন করা যায়। এ পদ্ধতি দুইটি বুলিয়ান যােগ এবং বুলিয়ান গুণ।
অন্যদিকে, সাধারণ অ্যালজেবরা বিস্তৃত ও অপেক্ষাকৃত জটিল গাণিতিক পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে বিভিন্ন গাণিতিক বিষয় যােগ, বিয়ােগ, গুণ, ভাগ, ভগ্নাংশ, বর্গমূল, ঘনমূল, সূচক, লগারিদম, কাল্পনিক সংখ্যা, বাস্তব সংখ্যা প্রভৃতি গাণিতিক নিয়মে করা হয়।
৩. সাধারণ অ্যালজেবরায় যে কোন অংক ব্যবহার করা যায়। অন্যদিকে, বুলিয়ান অ্যালজেবরায় শুধূ ০ এবং ১ ব্যবহার হয়।
৪. সাধারণ অ্যালজেবরায় পূরক চলকের ব্যবহার নেই। অন্যদিকে, বুলিয়ান অ্যালজেবরায় পূরক চলকের ব্যবহার আছে।
৫. সাধারণ অ্যালজেবরায় ভগ্নাংশ, ঋণাতক সংখ্যা ব্যবহার হয়। অন্যদিকে, বুলিয়ান অ্যালজেবরায় ভগ্নাংশ, ঋণাতক সংখ্যা ব্যবহার হয় না।
৬. সাধারণ অ্যালজেবরায় জ্যামিতিক ও ত্রিকোণমিতিক সূত্র ব্যবহার করা যায়। অন্যদিকে, বুলিয়ান অ্যালজেবরায় জ্যামিতিক ও ত্রিকোণমিতিক সূত্র
ব্যবহার করা যায় না।