সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ দুটি আকাশী ঘটনা যা প্রায়শই আমাদের মনে প্রশ্ন জাগিয়ে তোলে। এই দুই ঘটনার মধ্যে কিছু মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। নিচে সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণের মধ্যে পার্থক্য দেখানো হয়েছে-
সূর্যগ্রহণ (Solar Eclipse) :
আবর্তনের সময় যখন সূর্য ও পৃথিবীর মাঝখানে চন্দ্র অবস্থান নেয়, তখন সূর্যগ্রহণ (Solar Eclipse) ঘটে। সেসময় পৃথিবীতে অবস্থানরত পর্যবেক্ষকের দর্শন-সাপেক্ষে সূর্য, চন্দ্র এর আড়ালে চলে যায়- ফলে কিছু সময়ের জন্য সূর্যের আলো দেখা যায় না। সূর্যের আকার অনেক বড় হওয়াতে সূর্যগ্রহণের সময়, চাঁদ সূর্যকে পুরোপুরি ঢাকতে পারে না।
চন্দ্রগ্রহণ (Lunar Eclipse) :
আবর্তনের সময় যখন চন্দ্র ও সূর্যের মাঝখানে পৃথিবী অবস্থান করে, তখন চন্দ্রগ্রহণ (lunar Eclipse) ঘটে। পৃথিবীর ছায়ার জন্য চাঁদে সূর্যের আলো পৌঁছায় না, ফলে চাঁদকে কিছু সময়ের জন্য দেখা যায় না। অর্থাৎ পৃথিবী পৃষ্ঠের কোন দর্শকের কাছে চাঁদ আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে কিছু সময়ের জন্য অদৃশ্য হয়ে যায়।
সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণের মধ্যে পার্থক্যঃ
১. সূর্যগ্রহণ শুধুমাত্র অমাবস্যার সময় হওয়া সম্ভব। অন্যদিকে, চন্দ্রগ্রহণ হয় শুধুমাত্র পূর্ণিমার সময়।
২. অমাবস্যার সময় পৃথিবী এবং সূর্যের মাঝে চাঁদ অবস্থান করে, ফলে চাঁদের বলয় সূর্যের বলয়কে ঢেকে ফেলতে পারে। এটাই সূর্যগ্রহণের কারণ। অন্যদিকে, পূর্ণিমার সময়, চাঁদ পৃথিবী থেকে সূর্যের বিপরীত দিকে অবস্থান করে। ফলে পৃথিবীর ছায়া চাঁদের ওপর পড়ে, এটাই চন্দ্রগ্রহণের কারণ।
৩. প্রতিবছর সাধারণত দুটো চন্দ্রগ্রহণ হয়। কোন কোন বছর তিনটি চন্দ্রগ্রহণও হতে পারে। অন্যদিকে, বছরে দুই থেকে পাঁচটি সূর্যগ্রহণ হবার রেকর্ড রয়েছে। তবে সূর্যগ্রহণ দেখা যায় পৃথিবীর খুব সীমিত এলাকা থেকে। এর ফলে খুব কম মানুষই পূর্ণ সূর্যগ্রহণ দেখার সুযোগ পান। চন্দ্রগ্রহণ দৃশ্যমান হয় পৃথিবীর বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে।
৪. সূর্যগ্রহণ প্রায় ৫-৭ মিনিট স্থায়ী হয়। অন্যদিকে, চন্দ্রগ্রহণ এক ঘণ্টার মত স্থায়ী হয়।
৫. সূর্যগ্রহণের সময় সরাসরি তাকালে দৃষ্টিশক্তি হারানোর সম্ভাবনা বেশি থাকে কারণ এটি রেটিনার ক্ষতি করে। অন্যদিকে, খালি চোখে চন্দ্রগ্রহণ দেখা ক্ষতিকারক নয় কারণ এতে চোখের কোনো ক্ষতি হয় না।