সমাপিকা ক্রিয়া:
যে ক্রিয়া পদ বাক্যের ভাবের পরিসমাপ্তি ঘটায়, তাকে সমাপিকা ক্রিয়া বলে। অর্থাৎ, যে ক্রিয়া পদ বাক্যকে সম্পূর্ণ করে, আর কিছু শোনার আকাঙ্ক্ষা বাকি থাকে না, তাকে সমাপিকা ক্রিয়া বলে। যেমন- ছেলেরা খেলছে। ছেলেরা খেলা করছে। দ্বিতীয় বাক্যে ‘খেলা’ সমাপিকা ক্রিয়া নয়। এ জন্য ‘করছে’ সমাপিকা ক্রিয়া আনতে হয়েছে। নয়তো বাক্যটি সম্পূর্ণ হচ্ছে না।
অসমাপিকা ক্রিয়া:
যে ক্রিয়া পদ দ্বারা বাক্যের ভাবের পরিসমাপ্তি ঘটে না, তাকে অসমাপিকা ক্রিয়া বলে। অর্থাৎ, যে ক্রিয়া দ্বারা বাক্য সম্পূর্ণ হয় না, আরো কিছু শোনার আকাঙ্ক্ষা থেকেই যায়, তাকে অসমাপিকা ক্রিয়া বলে। উদাহরন- প্রভাতে সূর্য উঠলে…। আমরা হাতমুখ ধুয়ে…। এখানে ‘উঠলে’ এবং ‘ধুয়ে’ ক্রিয়াপদগুলো দ্বারা কথা শেষ হয়নি। সুতরাং ‘উঠলে’ এবং ‘ধুয়ে’ পদ দুটোকে অসমাপিকা ক্রিয়া বলে।
সমাপিকা ও অসমাপিকা ক্রিয়ার মধ্যে পার্থক্যঃ
সমাপিকা ক্রিয়া ও অসমাপিকা ক্রিয়ার মধ্যে কিছুটা মিল থাকলেও তাদের মধ্যে অনেকটা অমিলও রয়েছে। তাই সমাপিকা ক্রিয়া ও অসমাপিকা ক্রিয়ার মধ্যে পার্থক্য নিচে দেখানো হয়েছে-
১। যে ক্রিয়া পদ বাক্যের ভাবের পরিসমাপ্তি ঘটায়, তাকে সমাপিকা ক্রিয়া বলে। অর্থাৎ, যে ক্রিয়া পদ বাক্যকে সম্পূর্ণ করে, আর কিছু শোনার আকাঙ্ক্ষা বাকি থাকে না, তাকে সমাপিকা ক্রিয়া বলে। অন্যদিকে, যে ক্রিয়া পদ দ্বারা বাক্যের ভাবের পরিসমাপ্তি ঘটে না, তাকে অসমাপিকা ক্রিয়া বলে।
২। সমাপিকা ক্রিয়া দ্বারা বাক্যের ভাব সম্পূর্ণ রূপে প্রকাশ পায়। অন্যদিকে, অসমাপিকা ক্রিয়া দ্বারা বাক্যের ভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ পায় না।
৩। একটি সার্থক বাক্যে সমাপিকা ক্রিয়া থাকতে হবে। অন্যদিকে, একটি সার্থক বাক্যে অসমাপিকা ক্রিয়া থাকতে পারে, নাও থাকতে পারে। তবে থাকলে, সেই বাক্যে একটি সমাপিকা ক্রিয়াও অবশ্যই থাকতে হবে।
৪। কর্তার পুরুষভেদে সমাপিকা ক্রিয়ার রূপের পরিবর্তন ঘটে। যেমনঃ আমি পড়লাম। তুমি পড়লে। সে পড়ল। অন্যদিকে, পুরুষভেদে অসমাপিকা ক্রিয়ার রূপের পরিবর্তন ঘটে না। যেমনঃ আমি পড়ে বেড়াতে যাব। তুমি পড়ে বেড়াতে যাবে৷ সে পড়ে বেড়াতে যাবে।
৫। সমাপিকা ক্রিয়া বাক্যের শেষে বসে। অন্যদিকে, অসমাপিকা ক্রিয়া সমাপিকা ক্রিয়ার পূর্বে বসে।
৬। সমাপিকা ক্রিয়া স্বাধীন। অন্যদিকে, অসমাপিকা ক্রিয়া সমাপিকা ক্রিয়ার উপর নির্ভরশীল।