ধাপ চাষ (Step Cultivation):
উচ্চ ঢাল যুক্ত পাহাড়ি অঞ্চলে অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কৃষিকাজ করলে মৃত্তিকা ক্ষয় প্রাপ্ত হয়। তাই উচ্চ ঢাল যুক্ত পাহাড়ি অঞ্চলে ঢালের সমান্তরালে বিভিন্ন উচ্চতায় সমতল ভূমি তৈরি করে সিঁড়ির ন্যায় ধাপে ধাপে কৃষিজমি প্রস্তুত করা হয়। এই কৃষিজমিগুলি মৃত্তিকা নির্মিত ছোট ছোট বাঁধ দিয়ে ঘেরা থাকে। ফলে প্রবল জলপ্রবাহ দাঁড় মৃত্তিকার উপরের স্তরটি সম্পূর্ণরূপে অপসারিত হতে পারে না বলে মৃত্তিকা ক্ষয় কম হয়।
ফালি চাষ (Slice Cultivation)
সরু ফালি আকারে মাঠশস্য জন্মানোর পদ্ধতি। বায়ু প্রবাহের দিকে সমকোণে বা ভূখন্ডের স্বাভাবিক ঢাল অনুসরণ করে এ পদ্ধতিতে শস্য লাগানো হয়, যাতে বায়ু ও পানিপ্রবাহ দ্বারা সংঘটিত ভূমিক্ষয় রোধ করা যায়। অন্যভাবে বলা যায়, ভূমিক্ষয় (যেমন- পাহাড়ের পার্শ্বদেশে) পরিহার করতে সরু সারিতে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন শস্য জন্মানোর পদ্ধতি। বাংলাদেশে সাধারণত ফালি পদ্ধতিতে চাষ করা হয় না। সিলেট, চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও মধুপুর অঞ্চলের পাহাড়ে ধান ও শাকসবজির আবাদ করতে কখনও কখনও এ পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।
ধাপ চাষ ও ফালি চাষের মধ্যে পার্থক্যঃ
উচ্চ ঢাল যুক্ত পাহাড়ি অঞ্চলে অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কৃষিকাজ করলে মৃত্তিকা ক্ষয় প্রাপ্ত হয়। ধাপ চাষ ও ফালি চাষের মধ্যে পার্থক্য নিচে আলোচনা করা হয়েছে-
১। পাহাড়ি অঞ্চলে পাহাড়ের গায়ে ধাপ কেটে যে সমস্ত চাষাবাদ করা হয়ে থাকে তাকেই ধাপ চাষ বলে। অন্যদিকে, ফালি চাষ মাঝারি ঢালু পাহাড়ি অঞ্চলে করা হয় সাধারণত। পরপর সমান্তরাল ভাবে ফিতার মতো জমি তৈরী করে বিভিন্ন শস্য চাষ করা হয়।
২। সিঁড়ির মতো ধাপে ধাপে চাষ করাকে বলা হয় ধাপ চাষ। অন্যদিকে, আড়াআড়ি চওড়া ফিতের মত চাষ করাকে বলা হয় ফালি চাষ।
৩। যখন প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টি হয় তখন মাটির ক্ষয় রোধ করতে সাহায্য করে ওই ধাপ চাষ। অন্যদিকে, ফালি চাষ করা হয়; যাতে বায়ু ও জলপ্রবাহ থেকে মাটি ক্ষয় রোধ করা যায়।
৪। ধাপ চাষ পাহাড়ি অঞ্চলে করা হয়ে থাকে। অন্যদিকে, ফালি চাষ মাঝারি ঢালু পাহাড়ি অঞ্চল করা হয়ে থাকে।