উপনদী (Tributary):
যে সকল নদী কোন একটি উৎস হতে উৎপত্তি হয়ে কিছু দূরত্ব অতিক্রম করে অপর একটি নদীতে পতিত হয় তাকে সেই নদীর (যে নদীতে পতিত হয়েছে) উপনদী বলে। উপনদী হলো জল-বিভাজিকার একটি প্রকরণ। বৃহদায়তন নদীর একটি ক্ষুদ্রতর ধারা এসকল উপনদী; কয়েকটি উপনদী মিলিত হয় এক একটি বৃহদাকার নদীর সাথে। বাংলাদেশে প্রচুর উপনদী রয়েছে; যেমন: তিস্তা, ধরলা, করতোয়া, আত্রাই,সুবর্ণশ্রী ইত্যাদি নদীগুলো উৎসস্থল থেকে প্রবাহিত হয়ে যমুনা নদীতে গিয়ে মিশেছে; তাই এরা যমুনা নদীর উপনদী।
শাখা নদী (Distributary)
যে সকল নদী ঝরণাধারা, হ্রদ, বরফগলিত স্রোত ইত্যাদি থেকে উৎপন্ন না হয়ে অন্য কোন নদী থেকে উৎপন্ন হয় তাকে শাখানদী বলে। অন্যভাবে বলা যায় যে, কোন বৃহৎ নদী হতে কোন জলধারা বা নদী বের হয়ে অন্য কোন নদী কিংবা সাগরে পতিত হলে তাকে শাখানদী বলে। দাহরণ হিসেবে বলা যায়, ধলেশ্বরী যমুনার প্রধান শাখানদী। এছাড়াও মধুমতী, মাথাভাঙ্গা, কপোতাক্ষ নদ, পশুর নদ, বেতনা নদী ইত্যাদি পদ্মার শাখানদী।
উপনদী ও শাখা নদীর মধ্যে পার্থক্যঃ
উপনদী ও শাখা নদী উভয়টি নদী থেকে উৎপত্তি হয়েছে । উভয়টির ক্ষেত্রে কিছু মিল থাকলেও অনেকাংশে অমিল রয়েছে। তাই উপনদী ও শাখা নদীর মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-
১। যে সকল নদী ঝরণাধারা, হ্রদ, বরফগলিত স্রোত ইত্যাদি থেকে উৎপন্ন না হয়ে অন্য কোন নদী থেকে উৎপন্ন হয় তাকে শাখা নদী বলে। । অন্যদিকে, উপনদী হলো জল-বিভাজিকার একটি প্রকরণ। দুটি নদী মিশে গিয়ে একটি নদীতে মিলিত হয় তাহলে প্রথমোক্ত দুটি নদীকে উপনদী বলা হয়।
২। উপনদী সাগর বা সমুদ্রের সাথে মিলিত হয় না। অন্যদিকে, শাখা নদী সাগর বা সমুদ্রের সাথে মিলিত হতেও পারে, নাও পারে।
৩। উপনদী সাধারণত নদীর উপরের (উঁচু জায়গা থেকে প্রবাহিত হয়ে আসে) অংশে পাওয়া যায়। অন্যদিকে সাধারণত শাখা নদী মূল নদীর নিচের দিকে পাওয়া যায়।
৪। শাখা নদীর উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ধলেশ্বরী যমুনার প্রধান শাখা নদী। এছাড়াও মধুমতী, মাথাভাঙ্গা, কপোতাক্ষ নদ, পশুর নদ, বেতনা নদী ইত্যাদি পদ্মার শাখানদী। অন্যদিকে, উপনদীর উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, তিস্তা, ধরলা, করতোয়া, আত্রাই, সুবর্ণশ্রী ইত্যাদি নদীগুলো উৎসস্থল থেকে প্রবাহিত হয়ে যমুনা নদীতে গিয়ে মিশেছে; তাই এরা যমুনা নদীর উপনদী।
৫। নদী থেকেই উৎপত্তি উভয়টির। যদি বড় নদীতে মিশে যায় তাহলে “উপনদী”। অন্যদিকে, যদি নিজেই অন্য একটা নদী হয়ে যায় তাহলে “শাখানদী”।