প্রকৃত ফল (True Fruit):
শুধু গর্ভাশয় ফলে পরিণত হলে তাকে প্রকৃত ফল বলে। সুতরাং নিষিক্ত হওয়ার পর গর্ভাশয় পরিবর্তিত ও পরিবর্ধিত হয়ে ধীরে ধীরে পরিপক্কতা লাভ করে পূর্ণাঙ্গ ফলে পরিণত হয়। উদ্ভিদ বিজ্ঞানে এটিকে প্রকৃত ফল বা উদ্ভিদতাত্তি¡ক ফল বলা হয়। উদ্যানতত্ত্বের ভাষায় সব প্রকৃত ফলকে ফল বলা যাবে না। অর্থাৎ সব উদ্ভিদতাত্তি¡ক ফল উদ্যানতাত্তি¡ক ফল নয়।
অপ্রকৃত ফল (Pseudo Fruit):
গর্ভাশয় ছাড়া ফুলের অন্যান্য অংশ পুষ্ট হয়ে যখন ফলে পরিণত হয় তখন তাকে অপ্রকৃত ফল বলে। সব উদ্যানতাত্ত্বিক ফল কিন্তু উদ্যানতাত্ত্বিক বা প্রকৃত ফল নয়। যেমন- আপেল। এটি thallamus থেকে উৎপন্ন হয়। এটি একটি অপ্রকৃত ফল। ধান একটি প্রকৃত ফল কিন্তু তাই বলে ধানকে ফল বলা যাবে না। এক কথায় ফলের সংজ্ঞা দেয়া সম্ভব নয়। নিষেক ছাড়াও গর্ভাশয় বিশেষ প্রক্রিয়ায় (Parthenocarpically) ফলে রূপান্তরিত হতে পারে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে শুধু গর্ভাশয় নয় সম্পর্ণ পুস্পমঞ্জুরী অথবা গর্ভাশয়ের অংশবিশেষ পরিপুষ্ট, পরিবর্ধিত ও বিকশিত হয়ে ফলে রূপান্তরিত হয়। এ ধরনের ফলকে অপকৃত ফল বলা হয়।
প্রকৃত ফল ও অপ্রকৃত ফলের মধ্যে পার্থক্যঃ
প্রকৃত ফল ও অপ্রকৃত ফল দুটিই স্বাদ ও পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। তবু তাদের মধ্যে বৈশিষ্ট্যগত পার্থক্য রয়েছে। প্রকৃত ফল ও অপ্রকৃত ফলের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-
১। শুধু গর্ভাশয় ফলে পরিণত হলে তাকে প্রকৃত ফল বলে। অন্যদিকে, গর্ভাশয় ছাড়া ফুলের অন্যান্য অংশ পুষ্ট হয়ে যখন ফলে পরিণত হয় তখন তাকে অপ্রকৃত ফল বলে।
২। প্রকৃত ফলের গর্ভাশয় বা ডিম্বাশয়টি উন্মুক্ত থাকে। অন্যদিকে, অপ্রকৃত ফলের গর্ভাশয় বা ডিম্বাশয়টি আবৃত থাকে।
৩। প্রকৃত ফলের ফলত্বক খাদ্য হিসাবে গৃহীত হয়। অন্যদিকে, অপ্রকৃত ফলের বৃতি, প্রষ্পাক্ষ বা মঞ্জুরিপত্রাবরণী খাদ্যরূপে গৃহীত।
৪। প্রকৃত ফলের উদাহরণ— আম, কাঁঠাল ইত্যাদি। অন্যদিকে, অপ্রকৃত ফলের উদাহরণ— আপেল, চালতা ইত্যাদি।