আমরা বস্তুর গতির দিক ও পরিমাণের উপর ভিত্তি করে সমবেগ এবং অসমবেগের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারি। সমবেগ এবং অসমবেগের মধ্যে পার্থক্য বৈশিষ্ট্যগত পার্থক্য রয়েছে। নিচে সমবেগ এবং অসমবেগের মধ্যে পার্থক্য দেখানো হয়েছে।
সমবেগ (Uniform velocity) :
বেগ যদি সব সময় ধ্রুব থাকে তাহলে তাকে সমবেগ বলে। অর্থাৎ কোনো বস্তু যদি নির্দিষ্ট দিকে সমান সময়ে সমান পথ অতিক্রম করে তাহলে বস্তুর বেগকে সমবেগ বলে। যেমন- শব্দের বেগ, আলোর বেগ ইত্যাদি।
চিত্রে পাঁচটি বিন্দু দ্বারা 1s পর পর কোনো সরল রেখা বরাবর একই দিকে গতিশীল একটি বস্তুর অবস্থান নির্দেশ করা হয়েছে। এখানে পরপর দুটি বিন্দুর মধ্যবর্তী দুরত্ব 1m বস্তুটি একই অভিমুখে প্রতি সেকেন্ডে 1m দুরত্ব অতিক্রম করছে অর্থাৎ সমান সময়ে সমান পথ অতিক্রম করছে। কাজেই বস্তুর এ বেগ সমবেগ এবং এর মান হচ্ছে 1ms-1 । চিত্র দুটি দ্বারা সমবেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
অসমবেগ (Non-uniform velocity) :
যদি ভিন্ন ভিন্ন সময়ে বস্তুর বেগ ভিন্ন ভিন্ন হয় তবে তাকে অসম বেগ বলে। কাজেই সময়ের সাথে সরণের হারের মান অথবা দিক অথবা উভয়েই পরিবর্তিত হলে সরণের হারই অসম বেগ।
ধরি, একটি গতিশীল বস্তু কোন একটি দিকে প্রথম সেকেন্ডে 3m, দ্বিতীয় সেকেন্ডে 5m এবং তৃতীয় সেকেন্ডে 6m পথ অতিক্রম করলন। এখানে বস্তু সমান সময়ে সমান পথ অতিক্রম করছে না। সুতরাং বস্তুর এই বেগ অসমবেগ। অসম বেগের লেখচিত্র এ দেখানো হয়েছে।
সমবেগ এবং অসমবেগের মধ্যে পার্থক্যঃ
১. কোনো বস্তু যদি নির্দিষ্ট দিকে সমান সময়ে সমান পথ অতিক্রম করে তাহলে বস্তুর বেগকে সমবেগ বলে। অন্যদিকে, যদি ভিন্ন ভিন্ন সময়ে বস্তুর বেগ ভিন্ন ভিন্ন হয় তবে তাকে অসম বেগ বলে।
২. সমান সময়ের ব্যবধানে সমান দূরত্ব অতিক্রম করে। অন্যদিকে, সমান সময়ের ব্যবধানে অসমান দূরত্ব অতিক্রম করে।
৩. বেগ-সময় লেখচিত্র একটি সরলরেখা। অন্যদিকে, বেগ-সময় লেখচিত্র একটি বক্ররেখা।
৪. সমবেগ মানে স্থির গতি এবং অসমবেগ মানে পরিবর্তনশীল গতি।
৫. সমবেগ উদাহরণ: একটি গাড়ি সোজা রাস্তায় স্থির গতিতে চলছে। অন্যদিকে, অসমবেগ উদাহরণ: একটি বল উপরের দিকে ছোড়া হলে তার বেগ ধীরে ধীরে কমে যায় এবং এক পর্যায়ে শূন্য হয়ে যায়। তারপর বল নিচের দিকে পড়তে শুরু করে এবং তার বেগ বাড়তে থাকে।