কশেরুকী ও অকশেরুকী প্রাণীর মধ্যে পার্থক্য

পৃথিবীতে বিভিন্ন ধরনের প্রাণী বাস করে। এই প্রাণীদের মধ্যে দুটি প্রধান শ্রেণি হল কশেরুকী এবং অকশেরুকী। তাদের মধ্যে কিছু মৌলিক পার্থক্য রয়েছে যা তাদেরকে আলাদা করে। নিচে কশেরুকী ও অকশেরুকী প্রাণীর পার্থক্য দেখানো হয়েছে-

অকশেরুকী প্রাণী (Vertebrates) :
কশেরুকী প্রাণীর দেহের ভিতরে একটি কশেরুকা বা মেরুদণ্ড থাকে। এই কশেরুকা একটি শক্তিশালী স্তম্ভের মতো কাজ করে এবং দেহকে সমর্থন করে।
মেরুদণ্ড থাকে। সাধারণত বড় আকারের হয়। স্নায়ুতন্ত্র উন্নত। হৃদয় থাকে। শ্বাসপ্রশ্বাসের জন্য ফুসফুস বা গিল ব্যবহার করে। উদাহরণ: মানুষ, সিংহ, হাতি, মাছ, পাখি, সরীসৃপ ইত্যাদি।

অকশেরুকী প্রাণী (Invertebrates) :
অকশেরুকী প্রাণীর দেহে কশেরুকা থাকে না। তাদের দেহ নরম বা শক্ত খোলক দ্বারা আবৃত থাকে। এর কোন মেরুদণ্ড নেই। সাধারণত ছোট আকারের হয়ে থাকে। স্নায়ুতন্ত্র সহজ। হৃদয় নাও থাকতে পারে। শ্বাসপ্রশ্বাসের জন্য ত্বক বা গিল ব্যবহার করে। উদাহরণ: পোকা, মাকড়সা, কাঁকড়া, শামুক, জেলিফিশ ইত্যাদি।

কশেরুকী ও অকশেরুকী প্রাণীর মধ্যে পার্থক্যঃ
১. কশেরুকী প্রাণীর মেরুদণ্ড বা কশেরুকা (Vertebral column) থাকে। অন্যদিকে, অকশেরুকী প্রাণী মেরুদণ্ড থাকে না।

২. কশেরুকী প্রাণী সাধারণত বৃহৎ এবং জটিল দেহগঠনযুক্ত। অন্যদিকে, অকশেরুকী প্রাণী তুলনামূলকভাবে ছোট এবং সরল গঠনযুক্ত।

৩. কশেরুকী প্রাণীর কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র (মস্তিষ্ক এবং মেরুদণ্ড) থাকে। অন্যদিকে, অকশেরুকী প্রাণীর ছড়ানো স্নায়ুতন্ত্র থাকে, তবে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র অনুপস্থিত।

৪. কশেরুকী প্রাণীর দেহে অত্যন্ত উন্নত অঙ্গব্যবস্থা যেমন হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস, এবং কিডনি থাকে। অন্যদিকে, অকশেরুকী প্রাণী সাধারণত কম জটিল বা কম বিকশিত অঙ্গব্যবস্থা থাকে।

৫. কশেরুকী প্রাণীজগতে এদের সংখ্যা তুলনামূলক কম। অন্যদিকে, অকশেরুকী প্রাণী প্রাণীজগতে প্রায় ৯৭% প্রাণী অকশেরুকী।

৬. কশেরুকী প্রাণী অভ্যন্তরীণ কঙ্কাল (Endoskeleton) থাকে। অন্যদিকে, অকশেরুকী প্রাণী অনেক সময় বহির্গঠন (Exoskeleton) বা একেবারে কোনো কঙ্কাল থাকে না।

৭. কশেরুকী প্রাণী উদাহরণ- মাছ, উভচর (ব্যাঙ), সরীসৃপ (সাপ), পাখি, স্তন্যপায়ী (মানুষ)। অন্যদিকে, অকশেরুকী প্রাণী উদাহরণ- কীটপতঙ্গ (মৌমাছি), মোলাস্কা (ঝিনুক), কেঁচো, অক্টোপাস।