ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি এবং অগমেনটেড রিয়্যালিটির মধ্যে পার্থক্য

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (Virtual Reality):

অপ্রকৃত বাস্তবতা বা অসদ্‌ বাস্তবতা Virtual Reality(VR) এটি Virtual এবং Reality দুটো শব্দের সমন্বয়ে গঠিত। Virtual শব্দের অর্থ “সামনে” আর Reality শব্দের অর্থ “বাস্তবতা”। তবে এ বাস্তবতা শুধু মানুষ দ্বারা অনুভব করা যায়। অর্থাৎ, Virtual Reality শব্দের অর্থ হচ্ছে “সামনের বাস্তবতা “। একে এক ধরনের নির্দিষ্ট বাস্তবিক অনুকরণ বলা যেতে পারে। হচ্ছে প্রকৃতপক্ষে বাস্তব নয়, কিন্তু বাস্তবের ধারণা সৃষ্টি করতে সক্ষম এমন কল্পনানির্ভর বিষয় অনুভব করার ত্রিমাত্রিক অবস্থা উপস্থাপন। এটি এক ধরনের কম্পিউটার-নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা যাতে প্রতিমা নির্মাণ ও ছদ্মায়ন পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে মানুষ কৃত্রিম ত্রিমাত্রিক ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য পরিবেশের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে পারে বা উপলব্ধি করতে পারে।

অপ্রকৃত বাস্তবতাতে ছদ্মায়িত পরিবেশ হুবহু বাস্তব পৃথিবীর মত হতে পারে। এক্ষেত্রে অনেক সময় অপ্রকৃত বাস্তবতা থেকে বাস্তব অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়। আবার অনেক সময় ছদ্মায়িত পরিবেশ বাস্তব থেকে আলাদা হতে পারে। যেমন: অপ্রকৃত বাস্তবতানির্ভর কম্পিউটার খেলাসমূহ। ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে ত্রিমাত্রিক ইমেজ তৈরির মাধ্যমে অতি অসম্ভব কাজও সম্ভব করা যায়। কল্পনার পাখায় ভর করে ইচ্ছে করলে যেকোনো অসম্ভব কাজও করা সম্ভব হয়। কল্পনার পাখায় ভর করে ইচ্ছে করলে প্রশান্ত মহাসাগরের গভীরতম অঞ্চলে ঘুরে আসা যায়, মানুষের মস্তিষ্কের নিউরন সংযোগের উপর দিয়ে হাঁটা এবং জুরাসিক পার্কের সেই অতিকায় ডাইনোসরের তারাও খাওয়া যায়।

এটি 3D এবং 5D প্রযুক্তি ব্যবহার করে কম্পিউটারের মাধ্যমে তৈরি করা এমন একটি বিশ্ব যার মাধ্যমে আপনি ফিজিক্যাল এবং মেন্টালিটি দু মাধ্যমেই অনুভব করতে পারবেন।

অগমেন্টেড রিয়েলিটি (Augmented Reality)

অগমেন্টেড রিয়েলিটি (Augmented Reality) হলো এমন এক প্রযুক্তি, যাকে বাস্তব জগতের এক বর্ধিত সংস্করণ বলা যেতে পারে। আপনি বাস্তবে যা দেখবেন, তার উপর কম্পিউটার নির্মিত একটি স্তর যুক্ত করে দেবে Augmented Reality (AR)। আর তখন সেই বাস্তব এবং ভার্চুয়ালের সংমিশ্রণে তৈরি হবে এক নতুন অনুভূতি, সব কিছুকে এক ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার অভিজ্ঞতা। ‘Augmented Reality (AR)’ শব্দগুচ্ছের মূল শব্দ হলো ‘Augment’, যার অর্থ হলো কোনো কিছু যুক্ত করা। মূলত বাস্তবিক পরিবেশের সাথে যে কম্পিউটার নির্মিত ভার্চুয়াল স্তর যুক্ত করা হয়, এখানে তা-ই বোঝানো হয়েছে।

আপনি যা দেখতে চাইবেন, আপনার চাহিদা অনুযায়ী আপনাকে তা-ই দেখাবে Augmented Reality (AR)। শুধু কম্পিউটার নির্মিত চিত্রই নয়, এতে থাকতে পারে শব্দ, ভিডিও, গ্রাফিক্স, স্পর্শ করার অনুভূতি, এমনকি জিপিএস ডাটাও। Augmented Reality (AR)অনেকটা Computer Mediated Reality এর মতো, কিন্তু তার থেকেও অনেক বেশি উন্নত। CMR-এ বাস্তব বিষয়কে কম্পিউটারের মাধ্যমে পরিবর্তন করা হয় ‘Augment’ করার বদলে।

ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি এবং অগমেনটেড রিয়্যালিটির মধ্যে পার্থক্যঃ

অপ্রকৃত বাস্তবতা Virtual Reality(VR) এটি Virtual এবং Reality দুটো শব্দের সমন্বয়ে গঠিত। ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি এবং অগমেনটেড রিয়্যালিটির মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-

১। Virtual Reality শব্দের অর্থ হচ্ছে “সামনের বাস্তবতা “। একে এক ধরনের নির্দিষ্ট বাস্তবিক অনুকরণ বলা যেতে পারে। অন্যদিকে, অগমেন্টেড রিয়েলিটি (Augmented Reality) হলো এমন এক প্রযুক্তি, যাকে বাস্তব জগতের এক বর্ধিত সংস্করণ বলা যেতে পারে।

২। ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি অনেক সস্তা। অন্যদিকে, অগমেনটেড রিয়্যালিটি অনেক দামী।

৩। ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি উপভোগ করতে আপনাকে একটি হেডসেট পড়তে হয়। এবং এর মাধ্যমে আপনি নিজের জগত ছেড়ে সম্পূর্ণ নতুন এর জগতে প্রবেশ করে ফেলেন। অন্যদিকে, অগমেনটেড রিয়্যালিটিতে আপনার বাস্তব জীবনেই সব ভার্চুয়াল বস্তু তৈরি হয়ে যায়।

৪। ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি ব্যবহার করা হয়, কোনো ট্যুর করার জন্য, থ্রিডি ম্যাপস, থ্রিডি মুভিজ, থ্রিডি গেমস ইত্যাদি উপভোগ করার জন্য। অন্যদিকে, অগমেনটেড রিয়্যালিটি ব্যবহার করা হয় ইন্টারেক্টিভ কন্টেন্ট, গেমিং অথবা আপনার দুনিয়াতে যদি নতুন কিছু উদ্ভবন করতে চান তার জন্য।

৫। ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি এর উদাহরণ হলো গুগল কার্ডবোর্ড, অথবা কার্ডবোর্ড নির্ভর যেকোনো কোম্পানির হেডসেট, স্যামসাং গিয়ার ভি আর, অকিউলাস রিফ্ট, ইত্যাদি। অন্যদিকে, অগমেনটেড রিয়্যালিটি এর উদাহরণ হলো গুগল গ্লাস, মাইক্রোসফট হলো লেন্স, ইত্যাদি।