স্বরধ্বনি (Vowels) :
যে ধ্বনি অন্য ধ্বনির সাহায্য ছাড়া নিজেই সম্পূর্ণভাবে উচ্চারিত হয় এবং যাকে আশ্রয় করে অন্য ধ্বনির সৃজন হয়, তাকে স্বরধ্বনি বলে। অর্থাৎ যে ধ্বনি অন্য ধ্বনির সাহায্য ছাড়া নিজেই সম্পূর্ণভাবে উচ্চারিত হয় এবং যাকে আশ্রয় করে অন্য ধ্বনির সৃজন হয়, তাকে স্বরধ্বনি বলে।
স্বরধ্বনি উচ্চারণের সময় বাতাস মুখগহ্বরে কোনো বাধা পায় না। স্বরধ্বনি উচ্চারণের সময় জিহ্বা, ঠোঁট, দাঁত ইত্যাদি বাকযন্ত্রের কোনো অংশের সাথে ঘর্ষণ বা সংস্পর্শ হয় না। বাংলা ভাষায় স্বরধ্বনি ১১টি, যথা: অ, আ, ই, ঈ, উ, ঊ, এ, ঐ, ও, ঔ।
ব্যঞ্জনধ্বনি (Consonant) :
যে ধ্বনি স্বরধ্বনির সাহায্য ছাড়া স্পষ্টরূপে উচ্চারিত হতে পারে না এবং যে ধ্বনি সাধারণত অন্য ধ্বনিকে আশ্রয় করে উচ্চারিত হয়, তাকে ব্যঞ্জনধ্বনি বলে। অর্থাৎ ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণের সময় বাতাস মুখগহ্বরে কোনো বাধা পায়। ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণের সময় স্বরপথ সম্পূর্ণ উন্মুক্ত থাকে না।
ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণের সময় জিহ্বা, ঠোঁট, দাঁত ইত্যাদি বাকযন্ত্রের কোনো অংশের সাথে ঘর্ষণ বা সংস্পর্শ হয়। বাংলা ভাষায় ব্যঞ্জনধ্বনি ৩৯টি, যথা: ক, খ, গ, ঘ, চ, ছ, জ, ঝ, ট, ঠ, ড, ঢ, ত, থ, দ, ধ, ন, প, ফ, ব, ভ, ম, য, র, ল, ব, শ, ষ, স, হ।
স্বরধ্বনি ও ব্যঞ্জনধ্বনির মধ্যে পার্থক্যঃ
স্বরধ্বনি ও ব্যঞ্জনধ্বনি হল ভাষার দুটি প্রধান শ্রেণীর বাগধ্বনি। স্বরধ্বনি ও ব্যঞ্জনধ্বনির মধ্যে পার্থক্য নিচে দেখানো হয়েছে-
১. যে ধ্বনি অন্য ধ্বনির সাহায্য ছাড়া নিজেই সম্পূর্ণভাবে উচ্চারিত হয় এবং যাকে আশ্রয় করে অন্য ধ্বনির সৃজন হয়, তাকে স্বরধ্বনি বলে। অন্যদিকে, যে ধ্বনি স্বরধ্বনির সাহায্য ছাড়া স্পষ্টরূপে উচ্চারিত হতে পারে না এবং যে ধ্বনি সাধারণত অন্য ধ্বনিকে আশ্রয় করে উচ্চারিত হয়, তাকে ব্যঞ্জনধ্বনি বলে।
২. স্বরধ্বনি উচ্চারণের সময় বাতাস মুখগহ্বরে কোনো বাধা পায় না। অন্যদিকে, ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণের সময় বাতাস মুখগহ্বরে কোনো বাধা পায়।
৩. বাংলা ভাষায় স্বরধ্বনি ১১টি, যথা: অ, আ, ই, ঈ, উ, ঊ, এ, ঐ, ও, ঔ। অন্যদিকে, বাংলা ভাষায় ব্যঞ্জনধ্বনি ৩৯টি, যথা: ক, খ, গ, ঘ, চ, ছ, জ, ঝ, ট, ঠ, ড, ঢ, ত, থ, দ, ধ, ন, প, ফ, ব, ভ, ম, য, র, ল, ব, শ, ষ, স, হ।
৪. স্বরধ্বনি উচ্চারণের সময় স্বরপথ সম্পূর্ণ উন্মুক্ত থাকে। অন্যদিকে, ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণের সময় স্বরপথ সম্পূর্ণ উন্মুক্ত থাকে না।
৫. স্বরধ্বনি উচ্চারণের সময় জিহ্বা, ঠোঁট, দাঁত ইত্যাদি বাকযন্ত্রের কোনো অংশের সাথে ঘর্ষণ বা সংস্পর্শ হয় না। অন্যদিকে, ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণের সময় জিহ্বা, ঠোঁট, দাঁত ইত্যাদি বাকযন্ত্রের কোনো অংশের সাথে ঘর্ষণ বা সংস্পর্শ হয়।
৬. স্বরধ্বনি উচ্চারণের সময় স্বরতন্ত্রী কম্পিত হয়। অন্যদিকে, ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণের সময় স্বরতন্ত্রী কম্পিত হয় না।
৭. স্বরধ্বনি উচ্চারণের সময় শব্দের উচ্চতা, তীব্রতা এবং স্থায়িত্ব পরিবর্তন করা যায়। অন্যদিকে, ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণের সময় শব্দের উচ্চতা, তীব্রতা এবং স্থায়িত্ব পরিবর্তন করা যায় না।